লন্ডনবিডিনিউজ২৪: মানি লন্ডারিং, প্রতারণা ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের অজুহাতে বৃটিশ ব্যাংকগুলো বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার পর দেশজুড়ে প্রায় অর্থশত মানি ট্রান্সফার ও এজেন্ট ব্যবসা ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকীর সম্মুখীন হয়। বাংলাপাড়া খ্যাত ব্রিকলেনেই বন্ধ হয় কমপক্ষে ৮টি মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য মানি ট্রান্সফারগুলো বিভিন্ন ফাইন্যানশিয়াল কোম্পানির সহযোগিতা নিয়ে তাদের ব্যবসা অব্যাহত রাখলেও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে মার্কেটে টিকে থাকতে হচ্ছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে শাহ গ্লোবাল মানি ট্রান্সফার কোম্পানী। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যানশিয়াল কোম্পানী স্মল ওয়ার্লডের সঙ্গে পার্টনারশীপ ভিত্তিতে কাজ করে রেমিটেন্স মার্কেটকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে শাহ গ্লোবাল। গত ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব লন্ডনের অজবর্ণ স্ট্রিটের আরবর সিটি হোটেলে ‘গ্লোবাল রেমিটেন্স ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে গ্লোবাল ফাইন্যানশিয়াল সেক্টরের বর্তমান চিত্র তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বৃটেনে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার এজেন্ট লকেশন থেকে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেমিটেন্স প্রেরণ করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে থাকে প্রায় ৫শ মানি ট্রান্সফার কোম্পানী। বৃটেন থেকে প্রতি বছর ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স বাংলাদেশে যায়। আর গোটা বিশ্ব থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে যায় ১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স। সেই হিসেবে রেমিটেন্স সংগ্রহের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। সেমিনারে বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরন করে অর্থ প্রেরণ না করার কারণে মানি ট্রান্সফারগুলোর ওপর ফাইন্যানশিয়াল কন্ডাক্ট অথরিটির (এফসিএ) কঠোরতা নেমে এসেছে। এর ফলে ৫শ বাংলাদেশী মানি ট্রান্সফারসহ সাড়ে ৬হাজার রেমিটেন্স প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে হুমকির মধ্যে রয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শাহ গ্লোবাল মানি ট্রান্সফার কোম্পানি স্মল ওয়ার্লড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসের সহযোগিতায় মানি ট্রান্সফার এজেন্টগুলোকে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানসহ কাস্টমার সার্ভিস ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নানামুখী সুবিধা প্রদান করছে। শাহ গ্লোবাল মানি ট্রান্সফার কোম্পানির সিইও সানাম মিয়া আতিক-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন স্মল ওয়ালর্ড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিক ডে ও কান্ট্র্রি ম্যানেজার শ্যাম্পিও মারকিউস। টিভি প্রেজেন্টার ফারহান মাসুদ খান ও শাহ গ্লোবালের কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার তাসমিয়া আক্তারের উপস্থাপনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি মাহবুর রহমান, বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর ও জেএমজি এয়ার কার্গোর চেয়ারম্যান মনির আহমদ, বৃটিশ-বাংলাদেশী ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের (বিবিসিএ) প্রেসিডেন্ট ইয়াফর আলী, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা সাংবাদিক কে.এম আবু তাহের চৌধুরী, মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ হাউজের সিইও জুড মার্ক রোজারিও, বাংলা টিভির সিইও মুনাওয়ার মইনুল, পিবিএল এক্সচেঞ্জ ইউকে’র অপারেশন ম্যানেজার শের মাহমুদ ও শাহ গ্লোবালের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর নাজমুল হাসান। স্মল ওয়ার্লডের সিইও নিক ডে বলেন, এফসিএ’র কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে বাংলাদেশী মানি ট্রান্সফার ও এজেন্টগুলো ব্যবসাক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করছে। এক্ষেত্রে স্মল ওয়ার্লড বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে মানি ট্রান্সফারগুলোকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। শাহ গ্লোবাল মানি ট্রান্সফার কোম্পানীকে আমরা পার্টনার নিযুক্ত করেছি। শাহ গ্লোবালই বাংলাদেশী মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের সুবিধাগুলো প্রদান করবে। তিনি বলেন, শাহ গ্লোবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন পার্টনারশীপ থাকার সুবাদে আমরা তাদেরকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পেয়েছি। মানি ট্রান্সফারে বিভিন্ন সুবিধাদির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সার্ভিসের মধ্যে ব্যাংকিং ফ্যাসিলিটিজ, কাস্টমার সার্ভিস, ইন্সটেন্ট ক্যাশ পিক আপ (তাৎক্ষনিক নগদ অর্থ সংগ্রহের সুবিধা), ব্যাংক একাউন্ট ডিপোজিট ও মোবাইল টপ-আপ সুবিধাদি রয়েছে। তিনি বলেন, স্মল ওয়ার্লড এমন একটি ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস যে প্রতিষ্ঠানের ১৬০টি দেশে ২ লক্ষ এজেন্ট রয়েছে। শাহ গ্লোবাল-এর সিইও সানাম মিয়া আতিক বলেন, বৃটেনে রেমিটেন্স সেক্টরে একসময় কোনো রেগুলেটরি বডি ছিলো না। গত কয়েক বছর ধরে রেগুলেটরি বডি কাজ করছে। মানি ট্রান্সফার কোম্পানিগুলো এফসিএ’র কঠোর নিয়ম-নীতির ফলে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঠিক, কিন্তু এতে করে গ্রাহকেরা নিরাপদে টাকা পাঠাতে পারছেন। এখন আর টাকা পাঠিয়ে তা খোঁয়া যাওয়ার আশংকায় থাকতে হয় না। এটি একটি ভালো দিক। এফসিএ’র কড়াকড়ির কারণে রেমিটেন্স সেক্টরে অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। এতে করে গ্রাহকদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা ছিলো। আজকের সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কমিউনিটিকে অশ্বস্ত করা যে, আমরা নিরাপদ আছি। স্মল ওয়ালর্ড ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস শাহ গ্লোবারের মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এই সুবিধাগুলো মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে নিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, বৃটেনের রেমিটেন্স সেক্টর দিনদিনই সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই মার্কেটকে নিরাপদ রাখা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল সেক্রেটারি মাহবুর রহমান বলেন, ফাইন্যানশিয়াল রেগুলেটরি বডি মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়নের অজুহাতে মানি ট্রান্সফারগুলোর ওপর নানা কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এতে করে প্রকৃত রেমিটার্সরা বিভিন্নভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এই কড়াকড়ির সুবিধা-অসুবিধা দুটোই রয়েছে। মানুষ বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ করতে না পরলে বিকল্প একটি পথ বের করে নিবেই। অবৈথ পথে অর্থ প্রেরণের দিকে ঝুঁকে পড়বে। এতে করে সুবিধার চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি। তাই সরকারের উচিত প্রকৃত রেমিটার্সদের জন্য দেশে অর্থ প্রেরণের পথ সহজিকরণ করা। তিনি শাহ গ্লোবালের উদ্যোগের ভূয়শি প্রশংসা করে বলেন, তাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপ রেমিটেন্স সেক্টরকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। কে এম আবু তাহের চৌধুরী বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন সময় মানি ট্রান্সফার সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ আসে। প্রবাসীরা নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে প্রেরণের পর যথাসময়ে তা দেশে পৌঁছেনা। কোনো কোনো সময় দিনের পর দিন পেরিয়ে গেলেও ওই টাকা তাঁর স্বজনের কাছে পৌঁছেনা। অনেক সময় ঘরোয়াভাবে এইসব সমস্যার সমাধান করে দিতে হয়। মানুষ সেবা পাওয়ার পরিবর্তে এভাবে প্রতারিত হলে এই সেক্টরের সুনাম নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি শাহ গ্লোবালকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান। বিবিসিএ প্রেসিডেন্ট ইয়াফর আলী বলেন, কয়েক বছর আগে যখন মানি ট্রান্সফার খাতে সংকট সৃষ্টি হয়েছিলো, তখন শাহ গ্লোবালের সিইও একটি টিভি প্রোগ্রামে বলেছিলেন তাদের ব্যবসায় কোনো অসুবিধা হবে না। আজ তিনি এই সেক্টরে সাহসী অবস্থানের মধ্য দিয়ে সেই দিনের ঘোষণার প্রমাণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বৈধপথে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠাতে কোনো সীমারেখা থাকা উচিত নয়। কারণ এটা তার বৈধ অর্থ সে যতটুকু চায় ততটুকুই পাঠাবে। জুড মার্ক রোজারিও বলেন, একটি নন-বাংলাদেশী ফাইন্যানশিয়াল প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্মল ওয়ার্লড বাংলাদেশী মানি ট্রান্সফারগুলোকে যে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে তাতে অবশ্যই তারা প্রশংসা পাওয়ার দাবীদার। শাহ গ্লোবালকেও ধন্যবাদ, কারণ তারা স্মল ওয়ার্লডের সাথে মিলে সাইড-বাই-সাইড কাজ করছেন। বিবিসিসি’র ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মনির আহমদ রেমিটেন্স মার্কেটের বর্তমান অস্থিতিশীল অবস্থায় শাহ গ্লোবাল ও স্মল ওয়ার্লড যে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তা অসাধারণ বলে উল্লেখ করেন। সেমিনারে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিভিন্ন পর্যবেক্ষনমুলক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন শাহ গ্লোবালের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ নাজমুল হাসান। এতে বৃটেনের মানি ট্রান্সফার ব্যবসার বর্তমান পরিস্থিতি, মানি ট্রান্সফারের আইন-কানুন ও বর্তমান সমস্যা সমাধানে করণীয় বিষয়গুলো বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেমিনারের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন শাহ গ্লোবালের কর্পোরেট ইভেন্টস অর্গানাইজার মোঃ রাশেদুল হাসান। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য ছাড়াও স্পেন, ইতালী, পর্তুগাল ও বাংলাদেশেও শাহ গ্লোবালের শাখা রয়েছে।
Todays Transfer Rates
2020-09-01
Country | Bank Deposit | Cash Pickup |
---|---|---|
Bangladesh | 111.00 | 112.00 |
India | 113.00 | 114.00 |
Pakistan | 115.00 | 116.00 |
Nigeria | 117.00 | 118.00 |
Ghana | 119.00 | 120.00 |
Portugal | 121.00 | 122.00 |
Poland | 123.00 | 124.00 |
Brazil | 125.00 | 126.00 |
Transfer rates are updated on 01/09/2020 15.47 GMT, Rates are subject to change at any time.
44 & 54 Plumstead High Street, SE18 1SL London, United Kingdom